-ইশতিয়াক হাসান
জঙ্গল। অন্ধকার রাত। বিশাল, উঁচু উঁচু গাছের ফাঁক দিয়ে শন শন করে বয়ে যাচ্ছে শীতল বাতাস। পাতার শব্দকে মনে হচ্ছে দূর থেকে ভেসে আসা সমুদ্রের গর্জন। একটা গাছের গুড়িতে হেলান দিয়ে বসে আছেন একজন মানুষ। পাশেই ঠেস দিয়ে রাখা একটা উইনচেস্টার।
আগুন ঘিরে ওম নিচ্ছে আরো কয়েকজন। একজন ক্ষীন হয়ে আসা আগুনে একটা কাঠ ছুঁড়ে দিল। দপ করে ওপরে উঠল শিখা। মুহূর্তের মধ্যে গাছে ঠেস দিয়ে থাকা লোকটার চেহারা স্পষ্ট হয়ে উঠল। শুশ্রু মুখে চওড়া গোঁফ। মুখের এক কোণে একটা পাইপ, বহু আগেই নিভে গেছে। মাথায় বহু ব্যবহ্নত জীর্ন গোর্খা টুপি।
বোঝা যাচ্ছে গল্প করছেন লোকটা। পুরনো স্মৃতি এতোটাই জীবন্ত হয়ে উঠেছে, পাইপটা যে নিভে গেছে তাও ভুলে গেছেন, বিস্মৃত হয়েছেন পারিপার্শ্বিক। চারপাশে গুটিসুটি মেরে বসা শ্রোতাদের কথাও মনে নেই। এসময়ই শুনা গেল বুকে কাঁপন ধরা সেই ডাক, ‘ওওওওও-ও!’, পর্বতের ওপর থেকে নেমে প্রতিধ্বনি তুলে ছড়িয়ে পড়ল নিচের কুয়াশাভেজা উপত্যকায়, ‘অ-ওওনঘ! ও-ন-ওন! আঘ-হা! আঘ! আঘ! ও-ও-ওঘ।’ বাঘ ডাকছে। পরমুহূর্তেই ভারতের অরণ্যের রাজাকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়ে উত্তেজিত ডাক ছাড়ল এক মদ্দা হাতি।
তবে লোকটাকে দেখে মনে হচ্ছে না এসব তাঁর কানে যাচ্ছে। তিনি তখনো গল্পে মশগুল। গল্পটা জঙ্গলের, এর বাসিন্দাদের। হয়তো মানুষখেকো কোনো বাঘ কিংবা ধূর্ত চিতা বাঘ শিকারের কাহিনি। ভদ্রলোক আর কেউ নন, বিখ্যাত শিকারি কেনেথ এন্ডারসন।
এন্ডারসন নামটা শুনলে সাধারণ পাঠকদের হ্যান্স ক্রিশ্চিয়ান এন্ডারসনের কথা মনে হলেও আমার মনে পড়ে এই কেনেথ এন্ডারসনের নামই।
সত্যি কথা বলতে আমার জঙ্গলপ্রীতিতে বেশ বড় একটা ভূমিকা এই মানুষটির। কীভাবে?
আব্বুর স্টিলের আলমারিটার নিচের তাকে ঠাসাঠাসি করা ছিল এক গাদা বই। ক্লাস ফোরে পড়ি তখন সম্ভবত। ওই আলমারিটা ছিল আমার কাছে অন্য এক জগতের প্রবেশদ্বার। আব্বুর থেকে চাবি নিয়ে আলমারি খুলে একটা-দুটো বই বেছে নিতাম। আমার উপযোগী বই ছিল কমই। একদিন খুঁজতে খুঁজতে চোখ গেল জঙ্গল নামের একটি শিকার কাহিনির দিকে, রকিব হাসানের রূপান্তর করা। ততদিনে তিন গোয়েন্দার ভক্ত হতে শুরু করেছি। সেই সুবাদে রকিব হাসানের নাম অচেনা নয়। তবে মূল লেখক কেনেথ এন্ডারসন যেন একেবারেই ভিনগ্রহের এক জীব। প্রথম পরিচয়েই বালক আমি’র মন কেড়ে নিলেন এই শিকারি ও লেখক।
রকিব হাসানের সুখপাঠ্য অনুবাদে অচেনা এক পৃথিবীর সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিলেন এন্ডারসন। কী আশ্চর্য! এক শিকারির বই পড়েই অদ্ভুত এক মায়া জন্ম নিলো বন্যপ্রাণীর প্রতি আমার।
কীভাবে? ভয়ানক মানুষখেকোর রাজত্বে অসহায় গ্রামবাসীদের ভয়, নরখাদকের চতুরতা-হিংস্রতার পাশাপাশি একটা অপ্রিয় সত্যি মনে করিয়ে দিয়েছেন এন্ডারসন ওই বাঘগুলো শিকার হিসাবে মানুষকে বেছে নেওয়ার পেছনে ভূমিকা মানুষেরই। নিউটনের তৃতীয় সূত্রের মর্মান্তিক প্রয়োগ যেন এটি।
এন্ডারসন, জিম করবেট, জন হান্টারের যেসব বই রূপান্তর করেছে সেবা প্রকাশনী, বেশিরভাগই ছিল ওই আলমারির নিচের কয়েকটি তাকে। একটার পর একটা পড়তে, আরো ভালোভাবে বললে গিলতে লাগলাম। ফুরিয়ে যাওয়ার পর বার বার পড়েছি।
রহস্যপত্রিকায় প্রথম এন্ডারসনের কাহিনি রূপান্তর করি, সম্ভবত ২০০৫ সালে। একে একে নীলক্ষেত, নিউমার্কেটের জিনাত বুক হাউস এবং বুক ভিউ থেকে সংগ্রহ করলাম এন্ডারসনের ইংরেজি বইগুলো। ২০১০ সালে ঐতিহ্য থেকে বের হয় আমার প্রথম এন্ডারসনের কাহিনির রূপান্তর জঙ্গলে সাবধান!
যতোই পড়তে লাগলাম এন্ডারসন আমাকে মন্ত্রমুগ্ধ করে ফেললেন। এক একটা পাতা পড়ার পর নতুন করে বুঝতে শিখেছি মানুষটিকে। একজন শিকারি হওয়ার পরও বন্যপ্রাণীর প্রতি তাঁর অসাধারণ টান। রোমাঞ্চেরও কমতি নেই। যখন কোনো মানুষখেকোর পিছু নেন এন্ডারসন মনে হয় আমিও আছি ওই নিশ্চুপ জঙ্গলে। গাছের পাতায় মৃদু একটা খস খস শব্দে ঘাড়ের রোম দাঁড়িয়ে যেতেই হয়তো টের পাই আরে আমি তো বেডরুমে নিজের বিছানাটায়ই শুয়ে, বইয়ের পাতায় চোখ। তেমনি কোনো নরখাদকের শিকারকে অনুসরণের বর্ণনা পড়ে রাতের বেলা শিউরি ওঠি, এখনো।
এন্ডারসনের জন্ম ১৯১০ সালের ৮ মার্চ ভারতের হায়দারাবাদে, এক স্কটিশ পরিবারে। ছয় পুরুষ ধরে ওখানে বাস তাদের। পূর্ব পুরুষের নিবাস স্কটল্যান্ডে যান কেবল একবার। তাও খুব বেশিদিন থাকেননি। জঙ্গলের টানে ফিরে আসেন ভারতে। পড়ালেখার করেন হায়দারাবাদের বিশপ কটন স্কুল ও সেন্ট জোসেফ’স কলেজে। কিছুদিন ভারতের সেনাবাহিনীতে স্বেচ্ছাসেবক হিসাবে কাজ করেন। তবে চাকুরিজীবনের বেশিরভাগটাই কাটে ডাক বিভাগে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন ব্রিটিশ এয়ারক্রাফট ফ্যাক্টরির নকশা ও পরিকল্পনা বিভাগের তত্ত্বাবধায়ক ছিলেন।
এন্ডারসনের শিকারে হাতে খড়ি বাবা ডগলাস স্টুয়ার্ট এন্ডারসনের কাছে, কিশোর বয়সে। ডগলাস মোটেই বাঘ শিকারী ছিলেন না। ময়ুর, বন মোরগসহ পাখি কিংবা ছোট স্তন্যপায়ী প্রাণী শিকার পর্যন্তই ছিল তাঁর দৌড়। কিন্তু এই তিনিই ছিলেন এন্ডারসনের শিকারি হয়ে উঠার পিছনে সবচেয়ে বড় নিয়ামক। এন্ডারসনের ছেলে ডোনাল্ড এন্ডারসনও পরবর্তীতে বনে যান পাকা শিকারী। বিশেষ করে চিতা বাঘ শিকারে ডনের ছিল জুড়ি মেলা ভার।
সরকারি নথিতে ১৯৩৯-৬৪ এর মধ্যে এন্ডারসনের আটটি মানুষখেকো চিতা বাঘ আর সাতটি মানুষখেকো বাঘ মারার কথা বলা হয়েছে। তবে বাস্তবে এ সংখ্যাটি চল্লিশের মতো। কয়েকটা পাগলা হাতিও শিকার করেন।
ভারতের নীলগিরি ও আশপাশের ছড়ানো-ছিটানো জনবসতিগুলোতে তখন মানুষখেকোর উৎপাত হতো প্রায়ই। অসহায় গ্রামবাসীদের থেকে সাহায্যের আবেদন এলেই হয়েছে, সব কাজ শিকেয় তুলে ছুটেছেন নিজের প্রিয় স্টুডিবেকারটিতে চেপে। এমনকী অসুস্থ শরীরে কখনো-কখনো ঘুরে বেড়িয়েছেন মানুষখেকোর পেছনে।
স্কুলে পড়ার সময়ই ক্লাসরুমে নানান জাতের সাপ নিয়ে হাজির হয়ে বন্ধুদের চমকে দেওয়াটা নিয়মে পরিণত হয়। বাড়িতে কী পুষেননি। কুকুর থেকে শুরু করে হায়েনা, সাপ, ভালুক মায় চিতা বাঘের বাচ্চা পর্যন্ত। অরণ্য জনপদের বাসিন্দাদের সঙ্গে ছিল দারুন দোস্তি। তাঁর লেখায় বাইরা, রাঙ্গাদের বন্ধু হিসাবেই পরিচয় করিয়ে দিয়েছেন। বাইরার কাছ থেকে যে জঙ্গলের অনেক কিছুই শিখেছেন তাও স্বীকার করেছেন অবলীলায়। বাঘের ডাক নকল করাও শিখেছিলেন তার কাছ থেকে। এক কথায় জঙ্গলবিদ্যার গুরু মেনেছেন এই ঢ্যাঙ্গা, ঘোর কৃষ্ণ বর্ণের ওই পূজারি গোত্রের মানুষটিকে। ভারতের সালেম জেলার চিনার নদী তীরের গর্তে যাকে প্রথম আবিষ্কার করেছিলেন। পরিবারসমেত ওখানেই থাকত বাইরা।
ভারতের জঙ্গল সম্পর্কে এন্ডারসনের ছিল অগাধ জ্ঞান। সব কিছু মিালিয়ে দক্ষিণ ভারতের অরণ্য জনপদে এক কিংবদন্তিতে পরিণত হয়েছিলেন। সাধারণ শিক্ষিত মানুষরা উড়িয়ে দেয় এমন বিষয় যেমন কালো জাদুকর, তুকতাক, অশরীরী এসবকেও দেখার চেষ্টা করেছেন অরণ্যবাসীর চোখ দিয়ে। জঙ্গলে থাকতে থাকতে তিনিও যে হয়ে উঠেছিলেন ওদেরই একজন!
জীবনের শেষ দিকে এসে শিকার একেবারেই ছেড়ে দেন, হয়ে যান পুরুদস্তুর বন্যপ্রাণী সংরক্ষক। রাইফেল ফেলে ক্যামেরা হাতে ঘুরে বেড়াতেন বনে-বাদারে। দক্ষিণ ভারতের বন্যপ্রাণী রক্ষা আন্দোলনের সূচনাকারীদের একজন এন্ডারসন। তাঁর কাজের প্রভাব চোখে পড়বে এখনো। দক্ষিণ ভারতের তামিলনারুর ধরমপুরি কিংবা এর আশপাশের কোনো শহরের ধারের জঙ্গলে ঘুরে-বেড়াবার সময় আপনার হয়তো দেখা হয়ে যেতে পারে অরণ্যপ্রেমী কোনো তরুণের সঙ্গে। কথা বললেই অবাক হয়ে জানবেন, তাদের এই ভালবাসার জন্ম এক অরণ্যপ্রেমীর লেখা পড়ে। অর্ধশতাব্দীরও বেশি আগে ভারতের এসব জঙ্গলে ঘুরে বেড়াতেন বহিরাঙ্গে শিকারী আর অন্তরে নিঃসর্গী এক অরণ্যপ্রেমী। মানুষটি আর কেউ নন কেনেথ এন্ডারসন।
জঙ্গল সম্পর্কে অসাধারণ জ্ঞান আর জীবনের রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা মিলিয়ে এন্ডারসন পরিণত হোন চৌকস এক অ্যাডভেঞ্চার কাহিনি লেখকে। প্রকাশিত বইয়ের মধ্যে দিস ইজ দ্য জাঙ্গল, ম্যান ইটারস অ্যান্ড জাঙ্গল কিলারস, নাইন ম্যান ইটারস অ্যান্ড ওয়ান রোগ অন্যতম।
এন্ডারসনের এক শিকার অভিযানে, ভন্ড এক ফকিরের সঙ্গে পরিচয় হয় আমাদের। বাঘের হাতে আহত হয়ে মারা যাওয়ার আগে ভয়ানক এক অভিশাপ দেয় ফকির। কী ছিল সেই শাপ? তার মতো এন্ডারসনেরও মুত্যৃ হবে বাঘের হাতে। এন্ডারসনের মতো জাত শিকারির জন্য এ ধরনের মৃত্যু ছিল স্বাভাবিক। কিন্তু বহু মানুষখেকোকে পরাজিত করা তুখোড় শিকারির শরীরে বাসা বাধে ক্যান্সার। এতেই জীবন প্রদীপ নেভে তাঁর। ১৯৭৪ সালের ৩০ আগস্ট, মাত্র ৬৪ বছর বয়সে, মারা যান দুর্ধর্ষ এই শিকারি।
অবশ্য এটা অস্বীকার করব না, যখন কোনো বাঘ সেটা এমনকী মানুষখেকো হলেও মারা পড়ত এন্ডারসনের অব্যর্থ গুলিতে তখন বর্ণনা পড়ে কেমন একটা কষ্ট দানা বাধে আমার বাঘপ্রেমী মনে। ওই প্রাণীটারও তো আরো কয়টা বছর বন-পাহাড়ে ছুটে বেড়াবার কথা ছিল!
এন্ডারসনের বইয়ে জঙ্গল এবং এখানকার বন্যবাসিন্দাদের যতোটা চেনা যায়, খুব কম নৈসর্গিক, লেখকের লেখাতেই তেমনটা ফুটে উঠে! শিকারি, লেখক হিসাবে জিম করবেট অনেকই বিখ্যাত। আমারও ভারি পছন্দ করবেটের লেখা। তারপরও এন্ডারসনই বেশি প্রিয়। করবেটের বইয়ে বন্যদের থেকে একটু হলেও বেশি গুরুত্ব পেয়েছি কুঁয়োর সিং, মোতির মানুষেরা। এদিকে বাইরা, রাঙ্গারা থাকলেও এন্ডারসনের কাহিনির নায়ক বন্যজন্তুরাই। গাছের মগডালে প্রহরী হনুমানের সতর্ক সংকেত, কোনো মাংসাশী প্রাণীর আগমনী জানান দিয়ে কাকরের ভয়ার্ত ডাক, শক্তিশালী বাঘ আর বিশালদেহী মদ্দা হাতির মুখোমুখি হয়ে যাওয়া, বাইসনের বাঘের সঙ্গে মরণপণ লড়াই, রহস্যময় কালো চিতার বিচরণ-কত আশ্চর্য কাহিনি যে জেনেছি তাঁর বই পড়ে।
কিছু কিছু ঘটনাতো অদ্ভুতভাবে চলে আসে চোখের সামনে। জঙ্গলের ভেতরের এক সেতু দিয়ে সাইকেল চালিয়ে যাওয়ার সময় এক লোক মানুষখেকো বাঘকে নিচের ছড়ায় পানি খেতে দেখার দৃশ্য বর্ণনা করেছিলেন এন্ডারসন, রাঙ্গামাটির মানিকছড়ির প্রধান সড়কের ওপরে পুরনো এক সেতুতে একাকী দাঁড়িয়ে হঠাৎ আমার মনে হয়েছিল এটাই সেই সেতু। এখনই নিচ থেকে বাঘ পানি খাওয়ার শব্দ ভেসে আসবে কানে। হয়তো ষাট-সত্তর বছর আগে এরকম কিছু ঘটেছেও। ওই সময় পার্বত্য চট্টগ্রামের অনেক এলাকাতেই ছিল বাঘেরা।
আমার নিজের ধারণা রাতের অরণ্যের বর্ণনা এন্ডারসনের মতো করে দিতে পারেননি আর কেউ, হয়তো পারবেনও না। কিংবা সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তে আকাশের রং পাল্টানোর বিবরন। দিবাচরদের থেকে রাতচরাদের বনের দখল বুঝে নেওয়ার ব্যাপারটাও যেভাবে উঠে এসেছে প্রিয় এন্ডারসনের লেখায়, পাঠকের মনে হবে ঘটনাস্থলে উপস্থিত তিনি।
মাঝে মাঝেই আফসোস হয় ১৯৭৪-র আগে পৃথিবীতে এলে হয়তো ব্যাঙ্গালোরে গিয়ে তাঁর সঙ্গে দেখা হলেও হতে পারত। সুযোগ ছিল তাঁর ছেলে ডোনাল্ডের মুখ থেকে অরণ্যপ্রেমী মানুষটির গল্প শুনার। তবে ডোনাল্ড এন্ডারসন বছর কয়েক আগে চিরবিদায় নেওয়ায় সেটাও হারিয়েছি।
তবে ইনশাল্লাহ নীলগিরি যাবো, এন্ডারসনের প্রিয় নীলগিরি, কিংবা তাঁর বইয়ের আশ্চর্য সুন্দর অরণ্য, কেরালার ওয়েনাদে, আবার এন্ডারসনের বই পড়ে জেনেছিলম কয়েমবাটোর নামের আশ্চর্য সুন্দর এক পাহাড়রাজ্যের কথা, ওখানেও যাবো, আর অবশ্যই তাঁর পরিচয় করিয়ে দেওয়া সেই স্বাস্থ্যনিবাস ওটাকমান্ডে, পর্যটকরা যাকে চেনেন ওটি নামে। এই সবগুলো জায়গাই কিন্তু পড়েছে প্রায় ১ লাখ ৪০ হাজার বর্গ কিলোমিটার ব্যাপি ছড়িয়ে থাকা বিখ্যাত ওয়েস্টার্ন ঘাট বা পশ্চিমঘাট পর্বতমালার আনাচে-কানাচে।
সেখানকার চা ও কফি বাগানে, চুইয়ে চুইয়ে আলো প্রবেশ করা আাদম অরণ্যে, পাহাড়-ছড়ায় ঘুরতে ঘুরতে অনুভব করব এন্ডারসনকে, তাঁর শিকারসঙ্গী বাইরা-রাঙ্গা কিংবা তখনকার পশ্চিমঘাটকে। মনে হবে আমিও ফিরে গিয়েছি সেই সময়ে, জঙ্গলভ্রমণে আমার সঙ্গী এন্ডারসন। মনে হবে শিকার অভিযানে নিত্যসঙ্গী চায়ের ফ্লাস্ক থেকে চা ঢেলে দিচ্ছেন আমায়!