-মুহাম্মদুল্লাহ্ চৌধুরী
বাংলাদেশে পিসিপি’ এয়ারগানের ব্যবহার খুব ধীর গতিতে বাড়ছে। আধুনিক প্রযুক্তির সুবিধা নিতে অনেকেই স্প্রিংগার এয়ারগান এর বদলে পিসিপি এয়ারগানের দিকে ঝুঁকে পড়ছেন। অভিজ্ঞরা বলছেন, এয়ারগান নিয়ে যত কম প্রচার হয়; ততই মঙ্গল। কারন কখন কোন বিদঘুটে আইন এসে এর ব্যবহার বন্ধ করে দেয় কে জানে! কিন্তু আমার মতে এয়ারগান যদি শিকারের উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত না হয়-তাহলে অসুবিধে কোথায়? এয়াররাইফেল শুটিং তো একটা গেম। যদি ব্যবহারই না জানি তাহলে তো পিছিয়ে পড়তেই হবে। তাছাড়া বাড়ীতে আত্মরক্ষার জন্য যদি এয়ারগান থাকে, সেটা দোষের বলা যায় না। প্রত্যেক নাগরিকের আত্মরক্ষার অধিকার রয়েছে। যদিও বন্দুকের কাছে এয়ারগান কিছুই নয়; তারপরেও সামান্য প্রতিরোধ করা সম্ভব- যদি রাতে বাড়ীতে ডাকাত পড়ে! পুলিশের পক্ষে তো আর প্রতিটি নাগরিকের সুরক্ষা দেওয়া সম্ভব নয়। কখনো দেখিনি, কোন সন্ত্রাসী কমকান্ডে এয়ারগান ব্যবহৃত হয়েছে।
যাক মূল বিষয়ে ফিরে আসি। পিসিপি এয়ারগান হচ্ছে প্রি চার্জড নিউম্যাটিক মানে পাম্প করে বাতাস ভরে আগেই আপনার এয়ারগান এর মধ্যে শক্তি জমিয়ে রাখা হয়। যতক্ষন বাতাসের প্রেশার থাকে, ততক্ষন আপনি লিভার টেনে লোড করে গুলি করতে পারবেন। পিসিপির এক্যুরেসী অত্যন্ত ভাল। তবে সেটা রেগুলেটেড পিসিপি হতে হবে। নন রেগুলেটেড পিসিপি অনেকটা স্প্রিংগার এর মতই অ্যাকুরেসী। কারন এটার বাতাসকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য রেগুলেটর থাকেনা। প্রিসিহোল এর PX100 একটি নন রেগুলেটেড পিসিপি।
SPA কোম্পানীর (চায়নিজ) Artemis P10 হচ্ছে রেগুলেটেড পিসিপি। এর বাতাস ধারণ ক্ষমতা হচ্ছে 280 সিসি। এতে 240 BAR বা 3480.91 PSI প্রেশার পর্যন্ত পাম্প দেওয়া যায়। তবে কোম্পানী 200 BAR প্রেশার দিতে বলে। এতে এর স্বাস্থ্য ভাল থাকে। এর শক্তি হচ্ছে ৩০ ফুট পাউন্ড। 2০০ BAR পাম্পে ৪০টা শট করা যায়। 240 BAR দিলে ৫৫ টা মত শট করা যায়। এর এয়ার ট্যাংকটি হচ্ছে টাইটেনিয়ামের। টাইটেনিয়াম ভারী কিন্তু অ্যালুমিনিয়ামের থেকে অনেক শক্ত। দীর্ঘস্থায়ীত্ব বাড়বে কিন্তু ওজনটা পীড়াদায়ক। অ্যালুমিনিয়ামের এয়ারট্যাংক ৫ বছর পর পর চেঞ্জ করতে বলা হয় (Artemis P15 এর অ্যালুমিনিয়াম ); কিন্তু টাইটেনিয়ামের ক্ষেত্রে সেটা দশ বছর। উপরের ছবিতে যেটা কাঠের বাট বা স্টক দেখা যাচ্ছে, সেটা কাস্টম মেড।

প্রেশার গজটি সামনে দেওয়া। সামনে প্রেশার গজ থাকলে অনেক সময় একটা রিস্ক থাকে। সব বুলপাপ এয়ারগানেই এটা দেখা যায়। ভবিষ্যতে এক আধজন মরলে হয়তো কোম্পানী গজের স্থান পরিবতন করতে পারে।
ব্যারেলের সামনে উপরের ছবিতে যে থ্রেডেড কনভাটার লাগানো আছে, তা পরে কিনে লাগাতে হয়েছে। এটা একস্ট্রা সাইলেন্সার লাগানোর জন্য প্রয়োজন। আলী এক্সপ্রেস থেকে আনতে ৩০০০ টাকা মত লাগবে। সাইলেন্সার ছাড়া এর নিজস্ব সিস্টেম শব্দ কমাতে পারে, তবে তা গ্রহনযোগ্য নয়।

রাইফেলের মত লিভার টেনে লোড করতে হয়। আমার বেশ ভালো লেগেছে। সামান্য জোর খাটাতে হয়। যেটা কোন ব্যাপারই না। পিছনে হ্যামার এর স্ক্র ঘুরিয়ে এফপিএস কম বেশি করা যায়। কততে কত এফপিএস কমবেশি হবে তার জন্যে কোন মিটার বা চিহ্ন দেওয়া নাই। সুতরাং এটা খুব কাজের জিনিস না। টাইট করলে FPS বাড়ে, ঢিলা করলে কমবে।

সিঙ্গেল ম্যাগাজিন বেশ সুবিধাজনক। তবে ১০টার ম্যাগাজিনও আছে। বড় ম্যাগাজিনে দুটো সমস্যা। ডাবল পিলেট্ লোড হয়ে যেতে পারে এবং লো প্রোফাইল মাউন্ট লাগানো থাকলে দেখতে অসুবিধা। চিক রেস্টও পছন্দ হয়নি আমার। গালের হাড্ডিতে বাড়ি খেয়েছি একদিন।

স্কোপ রেইলটি উল্টো করে লাগানো আছে। ইচ্ছে করেই। পেছনের সীমানাটা ছোট মনে হয়েছে আমার কাছে। পিকাটিনি বা উয়েভার রেইল এটি। সুতরাং ডাভটেল মাউন্ট হলে হবে না।

স্মুথ ট্রিগার (দয়া করে “টেকার” বলবেন না)। অ্যাডজাস্টটেবল। ট্রিগারের সামনেই সেফটি ক্যাচ। পিছনে নিলে সেফটি অন, সামনে নিলে অফ। সেফটি অন করতে গিয়ে ট্রিগার টিপে দিতে পারেন? সম্ভবনা আছে।
সব মিলিয়ে আমার ভাল লেগেছে। ও রিং এর সংখ্যা বেশি না। ৫০-৭০ গজে গুলির উপর গুলি লাগে। ১০০ গজে ১.৫ ইঞ্চি গ্রুপিং সম্ভব। ভারী কিন্তু মজবুত। কিনতে পারেন যদি দোকানে থাকে।
1 thought on “Artemis P10 এর রিভিউ”